মহাস্থানগড় ঐতিহ্য
মহাস্থানগড়: বাংলার প্রাচীনতম নগরীর ঐতিহ্য
বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অমূল্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে মহাস্থানগড় অন্যতম। এটি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। ইতিহাসবিদদের মতে, এটি প্রাচীন ‘পুণ্ড্রনগরী’র রাজধানী ছিল, যার অস্তিত্ব ২৫০০ বছরেরও বেশি পুরোনো।
ইতিহাসের ঝলক
মহাস্থানগড়ের ইতিহাস মौर্য যুগ (তৃতীয় খ্রিস্টপূর্ব শতক) পর্যন্ত প্রসারিত। এখানে খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকে সম্রাট অশোকের শাসনকালে ব্রাহ্মী লিপি খোদাই করা শিলালিপি পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে যে মহাস্থানগড় সেই সময় থেকেই রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল ছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব
মহাস্থানগড় প্রত্নস্থলে বিভিন্ন সময়ের নিদর্শন পাওয়া গেছে—
- দুর্গ প্রাচীর
- প্রাচীন রাজপ্রাসাদ
- মসজিদ, মন্দির ও স্তূপ
- পাথরের শিলালিপি ও মুদ্রা
- প্রত্ননিদর্শন যেমন মৃৎপাত্র, অলঙ্কার, ভাস্কর্য ইত্যাদি
এসব নিদর্শন প্রমাণ করে যে, মহাস্থানগড় ছিল বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলিম সভ্যতার মিলনস্থল।
পর্যটন আকর্ষণ
বর্তমানে মহাস্থানগড় বাংলাদেশ ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। দুর্গনগরীর ভেতরে এবং আশপাশে দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- পরশুরামের প্রাসাদ
- মানকালীর ঢিবি
- খোদাই পাথরের শিলালিপি
- মুজিবনগর মিউজিয়াম (মহাস্থান জাদুঘর)
উপসংহার
মহাস্থানগড় শুধু একটি প্রত্নস্থল নয়, এটি আমাদের অতীত ঐতিহ্যের জীবন্ত সাক্ষ্য। বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পর্যটনে মহাস্থানগড় এক অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করছে
![]() |
Comments
Post a Comment